ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) নাকি ব্লগার (Blogger)! কোনটি দিয়ে ব্লগিং শুরু করবেন?

You are currently viewing ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) নাকি ব্লগার (Blogger)! কোনটি দিয়ে ব্লগিং শুরু করবেন?

ব্লগিং শুরু করার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করার কথা ভাবছেন। কিন্তু বুঝতে পারছেন না ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) নাকি ব্লগার (Blogger) কোন প্লাটফর্মটা বেছে নিবেন। কোন দিকে যাওয়া আপনার জন্য ভাল হবে। কোনটাতে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে? এসব প্রশ্ন যদি আপনার মনের মধ্যে ঘুরপাক খায় তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মূলত আপনার জন্য। ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরির কথা চিন্তা করলেই সর্ব প্রথম দুটি নাম আমাদের সামনে চলে আসে একটি হলো “ব্লগার” বা “ব্লগস্পট” অপরটি হলো “ওয়ার্ডপ্রেস”। আরো একাধিক প্লাটফর্ম আছে যেগুলো সাহয্যেও আপনি ব্লগ ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) এবং ব্লগার (Blogger) এ দুইটা বেশ জনপ্রিয়। এ দুইটি প্লটফর্মে খুব সহজেই আপনি আপনার ব্লগিং ওয়েবসাইটটি বানাতে পারবেন।

আপনি যদি ব্লগিং ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে কোন প্লাটফর্মটা ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানাবেন, কোন প্লাটফর্মটা আপনার জন্য ভালো হবে তা বুঝতে পারছেন না। আর এই না বুঝতে পারার কারণে এবং ভুল প্লাটফর্ম বেছে নেবার কারণে পরে আফসোস করতে হয়। অনেকে একারণে ব্লগিং এর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এর কারণ হলো আপনার দরকার ছিলো ওয়ার্ডপ্রেস আপনি কাজ শুরু করেছেন ব্লগ স্পটে আবার আপনার দরকার ছিলো ব্লগস্পট আপনি শুরু করেছেন ওয়ার্ডপ্রেসে।

আপনি হয়ত আপনার সমস্যাটা নিয়ে অনেকের সাথে আলোচনা করেছেন, বা করবেন। কিন্তু এখানেও দেখবেন যে একেকজন একেক দিকে যেতে বলবে। কেউ বলবে ব্লগার ব্যবহার করতে আবার কেউ বলবে ওয়ার্ডপ্রেস বেছে নিতে। একেকজন একেক ধরণের পরামর্শ দেওয়ার কারণে আপনি হয়তো ধাধায় পড়ে যাবেন।

এসমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সবচে ভাল সমাধান হলো ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগার এই দুইটা বিষয় নিয়ে কিছুটা পড়াশোনা করা। আপনি ইন্টারনেটে সার্চ করলে এই দুইটা বিষয়ের উপরে অনেক অনেক আর্টিকেল পাবেন। এসব আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনার ভেতরে একটা ধারণা চলে আসবে। আর তখন আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন আসলে আপনার জন্য কোন প্লাটফর্মটা ভালো হবে।

আমি এই আর্টিকেলে ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগার সম্পর্কে আপনাকে ক্লিয়ার একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। আপনার জন্য কোন প্লাটফর্মটা ভালো হবে তারও একটা সুনির্দিষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন। আশাকরি পুরো আর্টিকেল জুড়ে আপনি আমার সাথে থাকবেন। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।

ওয়ার্ডপ্রেস কি (WordPress)?

ওয়ার্ডপ্রেস কি, কেন শিখব? এর সহজ উত্তর হচ্ছে- বর্তমানে সবচে জনপ্রিয় ব্লগ পাব্লিশিং সফটওয়্যার হচ্ছে  ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress). এটি শুধু ব্লগ পাব্লিশিং সফটওয়্যারই না এটি একটি শক্তিশালি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমও। ওয়ার্ডপ্রেস php, MySql দ্বারা তৈরিকৃত একটি ওপেনসোর্স কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS)। ওয়ার্ডপ্রেস ডাউনলোড এবং ব্যবহার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। প্রথম পর্যায়ে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে শুধু ব্লগ তৈরি করা গেলেও বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে প্রায় সব ধরণের ওয়েবসাইট বানানো যায়। ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারের সবচে বড় সুবিধা হলো – ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট না জানলেও, আপনার কোন প্রকার কোডিং জ্ঞান না থাকলেও ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশন করে আপনি প্রায় সব ধরণের ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করা খুবই সহজ। বর্তমানে প্রতি ১০০টা ওয়েবসাইটের ৪১টি ওয়েবসাইটই ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে।

WordPress.org এবং WordPress.com এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য কি?

ওয়ারডপ্রেস এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট বানাতে গেলে দুটি ওয়েবসাইট পাবেন যথা- WordPress.com এবং WordPress.org. WordPress.com হলো ফ্রি এবং বেসিক ভার্সন এখানে একাউন্ট করার মাধ্যমে এবং একটি সাবডোমেইন ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।

অপরদিকে WordPress.org হলো একটি পরিপূর্ণ ভার্সন ওয়ার্ডপ্রেস অর্গ ব্যবহারে আপনি সম্পূর্ণ স্বাধীণতা পাবেন। ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট করার মাধ্যমে আপনি যেকোন ধরণের ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট না জানলেও ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করেও প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন। এখানে যেমন বেশি সুযোগ সুবিধা পাবেন তেমনি এটির রক্ষণাবেক্ষণের দায় সম্পূর্ণ আপনার। এবং ওয়ার্ডপ্রেস  (WordPress) এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট বানাতে ডোমেইন এবং হোস্টিং বাবদ কিছু টাকা খরচ করতে হবে।

WordPress.com (ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম) এর সুবিধা

  • সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারছেন।
  • ওয়েবসাইট ব্যকাপ এবং সিকিউরিটি নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না।
  • ফ্রিতে ৩ জিবি হোস্টিং সার্ভার স্পেস ব্যবহার করতে পারবেন। এরপরে আপনার দরকার হলে কিছু টাকা খরচ করে স্পেস কিনতে পারবেন।
  • ফ্রিতে সাবডোমেইন ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানালেও যেকোন সময় কাস্টম ডোমেইন এড করতে পারবেন।
  • ওয়ার্ডপ্রেস ডট কমেও নির্ধারিত কিছু ওয়ার্ডপ্রেস থিম আছে। এসব ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করে খুব সহজেই ওয়ার্ডপ্রেস সাইট রেডি করে ফেলতে পারবেন।

WordPress.com (ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম) এর অসুবিধা

  • ফ্রিতে কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবেন না। আপনাকে সাবডোমেইন ব্যবহার করেই সন্তষ্ট থাকতে হবে।
  • আপনি আপনার ইচ্ছামত থিম এবং প্লাগিন ব্যবহার করতে পারবেন না।
  • থিম আপগ্রেড করতে পারবেন না।
  • আপনি ওয়ার্ডপ্রেস টার্মস এন্ড কন্ডিশন না মেনে চললে যেকোন সময় আপনার সাইট ডেলেট করে দিতে পারে।
  • আপনার ব্লগ যদি প্রতি মাসে ২৫০০০ পেজ ভিউ না পায় তাহলে নিজের পছন্দ মত বিজ্ঞাপন যোগ করতে পারবেন না। তারপর বিজ্ঞাপন ব্যবহার করতে দিলেও মোট আয়ের ৫০% তাদেরকে দিতে হবে।
  • আপনার ওয়েবসাইটে তাদের পছন্দ মত বিজ্ঞাপন শো করাবে। এসব বিজ্ঞাপন রিমুভ করতে চাইলে আপনাকে টাকা খরচ করতে হবে।
  • এখানে আপনি কোন প্রকার কাস্টম কোড ব্যবহার করতে পারবেন না।
  • আপনি চাইলেও অন্যকোন সার্ভারে ওয়েবসাইট ট্রান্সফার করতে পারবেন না।

WordPress.org (ওয়ার্ডপ্রেস ডট অর্গ) এর সুবিধা

  • আপনি আপনার পছন্দ মত একটি কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবেন।
  • আপনার পছন্দ মত থিম এবং প্লাগিন ব্যবহার করতে পারবেন। কাস্টমাইজ, মোডিফাই করতে পারবেন। কাস্টম থিম এবং যেকোন ধরণের ফাংশনালিটি এড করতে পারবেন।
  • এখানে মালিকানা, কর্তৃত্ব যেহুতু সম্পূর্ণ আপনার হাতে সেহুতু অন্যকোন থার্ডপার্টির চোখ রাঙানির বালাই নাই।
  • কারো অনুমতি ছাড়াই ওয়েবসাইট এক হোস্ট থেকে অন্যহোস্ট ট্রান্সফার করতে পারবেন।
  • আপনার পছন্দমত যেকোন ধরণের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে পারবেন।
  • Custom Analytics এবং Tracking ব্যবহার করার সুবিধা পাবেন।

WordPress.org (ওয়ার্ডপ্রেস ডট অর্গ) এর অসুবিধা

  • ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার জন্য টাকা খরচ করতে হয়।
  • যেকোন প্রকার আপডেট এবং আপগ্রেড করার দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনার।
  • নিয়মিত ওয়েবসাইট ব্যাকাপের দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে।
  • যেকোনা প্রকার স্পামিং এবং ভাইরাস এটাক হতে ওয়েবসাইটকে রক্ষার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হয়।

এখন আপনার জন্য কোনটি ভালো হবে?

এটার উত্তর একদম সহজ। আপনি যদি শখের বশে স্রেফ শখের বশে ব্লগ তৈরি করতে চান তাহলে WordPress.com ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানাতে পারেন। কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু আপনি যদি প্রফেশনালি একটি ব্লগ বানাতে চান তাহলে অবশ্যই WordPress.org ব্যবহার করবেন। কিছু টাকা খরচ হলেও ওয়েবসাইটের সম্পূর্ণ মালিকানা থাকবে আপনার হাতে, এবং ওয়েবসাইটে আপনি যা খুশি তাই করতে পারবেন।

আরো পড়ুন…

ব্লগার এর পরিচয়

ব্লগ তৈরির জন্য ব্লগার একটি উম্মুক্ত প্লাটফর্ম। এটি গুগলের একটি পণ্য যার মাধ্যমে বাণিজ্যিক অথবা ব্যক্তিগত ব্লগ তৈরি করা যায়। ব্লগার প্রথমে পায়রা ল্যাব দ্বারা ডেভেলপ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে এটিকে ২০০৩ সালে গুগল কিনে নেয় এবং তাদের নিজস্ব সার্ভারে হোস্ট করে। একজন ইউজার একটি একাউন্ট থেকে সর্বোচ্চ ১০০টি ব্লগ তৈরি করতে পারবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। তবে আপনাকে বিনামূল্যে ব্লগ তৈরি করতে হলে অবশ্যই সাবডোইন ব্যবহার করতে হবে। ব্লগার-এর স্বয়ংক্রিয় সাব-ডোমেইন হচ্ছে .blogspot.com. অর্থাৎ আপনি আপনার ব্লগের জন্য যে নাম দিবেন তার পরে অবশ্যই .blogspot.com যুক্ত হবে। তবে আপনি চাইলে একটি কাস্টম ডোমেইনও ব্যবহার করতে পারবেন। সেজন্য এক্সট্রা টাকা খরচ করে একটি ডোমেইন কিনে নিতে হবে।

আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপ সম্পর্কে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে ব্লাগার ব্যবহার করে ফ্রিতে যেকোন ধরণের ওয়েব  সাইট বানাতে পারবেন।

ব্লগার এবং ওয়ার্ডপ্রেসের মধ্যে পার্থক্য

ব্লগার এবং ওয়ার্ডপ্রেস দুটিই ওইয়েবসাইট তৈরির জন্য ফ্রি প্লাটফর্ম। তবু এদুটির মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য আছে। আমি আজ এখানে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

গুগল ব্লগার

ওয়ার্ডপ্রেস

মালিকানাগত দিক থেকে পার্থক্য

ব্লগার ডট কম গোগলের একটি ফ্রি ব্লগিং সার্ভিস। এটির মালিকানা এবং কন্ট্রোল ক্ষমতা শুধুমাত্র গোগলের হাতে। আপনি অথবা আমি একজন প্রকাশক মাত্র। অপরদিকে ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress.org) ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানালে সেটির মালিকানা এবং ক্ষমতা, কর্তৃত্ব সম্পূর্ণ আপনার হাতেই থাকবে।
আপনি ইচ্ছা করলেই ওয়েবসাইট গোগলের সার্ভার থেকে অন্য সার্ভারে ট্রান্সফার করতে পারবেন না। আপনি আপনার পছন্দমত যেকোন সার্ভারে সাইট হোস্ট করতে পারবেন এবং যেকোন সময় ট্রান্সফার করতে পারবেন।

খরচের দিক থেকে পার্থক্য

একটি সাবডোমেইন ব্যবহার করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আপনার ব্লগ লঞ্চ করতে পারবেন। এখানেও একটি সাবডোমেইন ব্যবহার করে আপনার ব্লগ লঞ্চ করতে পারবেন। তবে এখানে আপনার ক্ষমতা অনেক সীমীত।
কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে শুধু ডোমেইনের দাম বহন করতে হবে। এছাড়া আর কোন প্রকার খরচ করতে হবে না। ওয়ার্ডপ্রেস অর্গ ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানালে ডোমেইনের সাথে হোস্টিংও আপনাকেই কিনতে হবে এবং আপনি যত খুশি তত স্পেস বাড়িয়ে নিতে পারবেন।।

ক্ষমতায়ন এর দিক থেকে পার্থক্য

ব্লগার ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানালে প্রকাশক হিসেবে আপনার ক্ষমতা সীমীত থাকবে। আপনি তিন ধরণের ব্লগ বানাতে পারবেন। (১) ব্যক্তিগত ব্লগ (একমাত্র প্রকাশক ছাড়া অন্য কেউ ব্লগ ভিজিট করতে পারবে না।), (২) নির্দিষ্ট পাঠক ব্লগ (আপনি নির্দিষ্ট করে দিতে পারবেন কারা কারা আপনার ব্লগ ভিজিট করতে পারবে।) এবং (৩) সার্বজনিন (সবাই আপনার ব্লগ ভিজিট করতে পারবে।)। ওয়ার্ডপ্রেস অর্গ ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানালে সম্পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে আপনার হাতে। আপনি এখানে চাইলে যকোন পোস্ট অথবা পেজ আলাদা আলাদা ভাবে ব্যক্তিগিত, নির্দিষ্ট পাঠক অথবা সার্বজনিন করতে পারবেন। এখানে আপনি যদি কোন একটি পোস্ট Visibility: Privet করে রাখেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইট সবাই ভিজিট করতে পারলেও ঐ পোস্টটি কেউ দেখতে পারবে না। আপনি ইচ্ছা করলে এখানে যেকোন পোস্ট অথবা পেজ পাসওয়ার্ড প্রটেক্টেড করেও রাখতে পারবেন।
যে কোন ধরনের কোডিং যুক্ত এবং এডিটিং করতে পারবেন। এখানেও যে কোন ধরনের কোডিং যুক্ত এবং এডিটিং করতে পারবেন।

ব্লগ ডিজাইনগত পার্থক্য

ব্লগারে আপনি যেকোন ধরণের কাস্টম ডিজাইন করার সুবিধা পাবেন। ওয়ার্ডপ্রেসেও যেকোন ধরণের ডিজাইন যুক্ত করতে পারবেন। বিভিন্ন ধরণের পেজ বিল্ডারগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখে।
থিম ডিজাইন ও পরিবর্তন করতে পারবেন Variable ব্যবহার করার মাধ্যমে। ওয়ার্ডপ্রেসেও বিভিন্ন ধরণের পেজ বিল্ডার প্লাগিন আছে যেগুলো সাহায্যে ড্রাগ এন্ড ড্রপ করে ডিজাইন করতে পারবেন।

প্লাগইন এবং থিম

 কিন্তু বিভিন্ন ধরণের টেম্পলেট আছে যেগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু প্লাগইন ব্যবহার করার কোন সুযোগ  নেই। ওয়ার্ডপ্রেসে হাজার হাজার ফ্রি এবং পেইড থিম ও প্লাগিন আছে যেগুলো আপনি ইচ্ছা মত ব্যবহার করতে পারবেন।
ব্লগারে শুধুমাত্র গুটি কয়েক Gadget ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্ত ওয়ার্ডপ্রেসে আপনার ইচ্ছামত যেকোন ফাংশনালিটি এড করতে পারবেন

নিয়ন্ত্রণ এর দিক থেকে পার্থক্য

ডাটাবেসের নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে থাকবে না। ডাটাবেসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে থাকবে।
আপনার পোস্ট, পেজ বা ক্যাটাগরি ইউআরএল স্ট্রাকচার নির্ধারণ করে দিতে পারবেন না। আপনার পোস্ট, পেজ বা ক্যাটাগরি ইউআরএল স্ট্রাকচার নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।

পরিধিগত পার্থক্য

ব্লগারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে যেকোন ধরণের ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন। তবে এখানে বেশ কিছু সিমাবদ্ধতা আছে। যেমন কমিউনিটি ব্লগে ইচ্ছেমত লেখকের অনুমতি দিতে পারবেন না। তাছাড়া সকল ক্ষেত্রেই সরাসরি রেজিস্ট্রেশন সুবিধা দিতে পারবেন না। ওয়ার্ডপ্রেস অর্গ এর সাহায্যে ব্যক্তিগত পোর্টফলিও থেকে শুরু করে বিশালাকার কমিউনিটি ব্লগ, নিউজ সাইট, কোম্পানি ওয়েবসাইট, ফোরাম, সার্চইঞ্জিন, ই-কমার্স সাইট সহ প্রায় সব ধরনের সাইট তৈরি করতে পারবেন। অনলাইনে এর ব্যবহার ও পরিধি সর্ববৃহৎ।

মনিটাইজেশন

Google Adsense ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে। এখানেও Google Adsense ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে।
যে কোন ধরনের এ্যাড মনিটাইজ করার সুযোগ রয়েছে। এটিতেও যে কোন ধরনের এ্যাড মনিটাইজ করার সুযোগ রয়েছে।

এসইও এর দিক থেকে পার্থক্য

ব্লগার ডিফল্টভাবেই এসইও ফ্রেন্ডলি। এসইও সম্পর্কে খুব ভাল জ্ঞান বা থাকে সেক্ষেত্রে ব্লগার আপনার জন্য সব চেয়ে ভালো কোন প্লাটফর্ম। ব্লগারে অন্য যেকোন প্লাটফর্মের চেয়ে ইমেইজ খুব ভালো এসইও র‌্যাংক করে। তবে ব্লগারে অ্যাডভান্স লেভেলের এসইও সম্ভব নয়। ওয়ার্ডপ্রেস ডিফল্টভাবে এসইও স্ট্র্যাকচার ফলো না করলেও এটি বেশ এসইও ফ্রেন্ডলি। সেটিং অপশন থেকে কিছু স্ট্রাকচার ঠিক করে নিলে এসইও (seo) এর ক্ষেত্রে খুব ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন প্লাগইন ব্যবহার করে অ্যাডভান্স লেভেলের এসইও করা সম্ভব।

সিকিউরিটিগত পার্থক্য

ব্লগের তথা ওয়েবসাইটের জন্য সিকিউরিটি অনেক বড় একটা বিষয়। ব্লগার যেহুতু গোগলের একটা সার্ভিস এবং গোগলের নিজস্ব সার্ভার। যদি আপনার পাসওয়ার্ড সংক্রান্ত কোন দূর্বলতা না থাকে তাহলে বলা যায় আপনার ব্লগ ৯৯.৯৯% সিকিউর। সেক্ষেত্রে আপনার ব্লগ হ্যাক করতে হলে প্রথমে গুগলের সার্ভার হ্যাক করতে হবে। আমি আজ পর্যন্ত কোন ব্লগার সাইট হ্যাক হতে দেখি নি। ওয়ার্ডপ্রেস যেহুতু সেলফ হোস্টেড ওয়েবসাইট সেহুতু এটির সিকিউরিটি এবং রক্ষণাবেক্ষণের দ্বায়িত্ব কেবল প্রকাশকের উপরে বর্তায়। ওয়ার্ডপ্রেস বেশ সিকিউর একটা প্লাটফর্ম হলেও এখানে বিভিন্ন ধরণের থিম এবং প্লাগিন ব্যবহার করার ফলে মাঝে মাঝে এটি সিকিউরিটি ঝুকির মুখে পড়তে পারে। তবে ওয়ার্ডপ্রেসে বিভিন্ন ধরনের প্লাগইন ব্যবহার করে সিকিউরিটি বাড়ানো যায়।

ভবিষ্যৎ

ব্লগার যেহুতু সম্পূর্ণরূপে গোগলের নিজস্ব সম্পত্তি কাজেই এটির ভবিষ্যৎ গোগলের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। প্রকাশকের যেকোন পোস্ট এমনকি সম্পূর্ণ ব্লগ মুছে ফেলার অধিকার আছে গোগলের। ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে বানানো ওয়েবসাইট প্রকাশকের সম্পূর্ণ নিজস্ব সম্পত্তি । এই ওয়েবসাইট ভবিষ্যতে চালু কিংবা বন্ধ থাকবে সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে প্রকাশেকের ইচ্ছার উপর।

গোগল ব্লগার এর সুবিধা

  • ব্লগারের সবচে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে আপনাকে একটি টাকাও খরচ করতে হচ্ছে না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে একাদিক ব্লগ বানাতে পারবেন।
  • কয়েকটি মাত্র ক্লিকের মাধ্যমেই একটি ব্লগ রেডি করে ফেলা যায়।
  • গোগল সার্ভার ব্যবহার করার কারণে এটির সিকিউরিটি, ব্যাকাপ নিয়ে ভাবতে হয় না। ব্লগারে বানানো ওয়েবসাইট তুলনামূলক দ্রুতি গতি সম্পন্ন হয়ে থাকে।
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে আইডিয়া না থাকলেও ওয়েবসাইট বানানো যায়।
  • আপনি চাইলে অল্প টাকায় বিভিন্ন ধরণের এক্সট্রা ফাসালিটি সম্পন্ন প্রিমিয়াম টেম্পলেট কিনে আপনার ব্লগের কার্য ক্ষমতা বাড়াতে পারবেন।
  • ব্লগ হ্যাক বা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার চান্স একেবারেই কম।
  • ব্লগার গোগলের নিজস্ব প্রডাক্ট হওয়াতে ডিফল্ট ভাবেই এটি এসইও ফ্রেন্ডলি।
  • স্মার্ট ফোনের জন্য আছে বিশেষ অ্যাপ। যার সাহায্যে ফোনের মাধ্যমেই পোস্ট লিখতে এবং পাব্লিশ করতে পারবেন।

গোগল ব্লগার এর অসুবিধা

  • এটির মালিকানা যেহুতু গোগলের হাতে সেহুতু একটু নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে গোগল আপনার ওয়েবসাইট মুছে ফেললে আপনার কিছুই করার থাকবে না।
  • ইচ্ছা মত প্লাগিন ব্যবহার করা যায় না।
  • বাইডিফল্ট এসইও ফ্রেন্ডলি হলেও এডভান্স এসইও ব্লগারে সম্ভব না।

ওয়ার্ডপ্রেস নাকি ব্লগার, কোন দিকে যাবেন?

আপনি দুটোর যেকোন একটা বেছে নিতে পারেন। দুটোই খুব ভালো মানের ব্লগিং প্লাটফর্ম। আপনি যদি শখের বশে স্রেফ শখের বশে ব্লগ তৈরি করতে চান তাহলে ব্লগার ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানাতে পারেন। কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু আপনি যদি প্রফেশনালি একটি ব্লগ বানাতে চান তাহলে অবশ্যই WordPress.org ব্যবহার করবেন। কিছু টাকা খরচ হলেও ওয়েবসাইটের সম্পূর্ণ মালিকানা থাকবে আপনার হাতে, এবং ওয়েবসাইটে আপনি যা খুশি তাই করতে পারবেন।

আশাকরি আপনাকে কিছুটা হলে সাহায্য করতে পেরেছি। এরপরো যদি কোন জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। ভালো লাগলে আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন। আর ভাল না লাগলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন। আজ এ পর্যন্তই। ভাল থাকবেন।

Leave a Reply