ওয়েব ডেভেলপার কিভাবে হওয়া যায়-কম্পিলিট গাইডলাইন

You are currently viewing ওয়েব ডেভেলপার কিভাবে হওয়া যায়-কম্পিলিট গাইডলাইন

ওয়েব ডেভেলপার: ওয়েবসাইট কি? ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট কি? কিভাবে ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট কিভাবে শিখব? ওয়েব ডেভেলপার এর ক্যারিয়ার কেমন? ওয়েব ডেভেলপার হতে কেমন সময়ে লাগে? ওয়েব ডেভেলপার এর কাজ কি? ওয়েব ডেভেলপার এর বেতন কত? কেন ওয়েব ডেভেলপার হবো? কোথা থেকে শিখবো? ওয়েব ডিজাইনার এবং ওয়েব ডেভেলপার এর মধ্য পার্থক্য কি? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজছেন, জানতে চাচ্ছেন ওয়েব ডেভেলপার ও ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে। হ্যা, তাহলে এই লেখাটি পড়তে পারেন। আমি উপরোক্ত সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দেব আজকের আর্টিকেলে এবং কিভাবে হবেন ওয়েব ডেভেলপার কম্পিলিট গাইডলাইন পাবেন।

ওয়েবসাইট কি?

আপনি এখন যেখানে এই লেখাটি পড়ছেন এটাই একটা ওয়েবসাইট। https://kamalmostakin.com এরকম আরো লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট আছে পৃথিবী জুড়ে। আপনি গুগলে কোন কিছু লিখে সার্চ করলে আপনার সামনে যে লিঙ্কগুলো আসে এগুলো প্রত্যকেটা একেকটা ওয়েবসাইট এমনকি গোগল নিজেও একটা ওয়েবসাইট। একটি ওয়েবসাইট হল কতগুলো ফাইলের সমষ্টি। কতগুলো প্রগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়। যেমন HTML, CSS, JS, PHP ইত্যাদি। যিনি ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাকে বলা হয় ওয়েব ডেভেলপার। ওয়েবসাইটের ফাইল তৈরি করলেই ওয়েসাইটটি ভিজিটরের কাছে পৌছায় না। এজন্য ওয়েবসাইটের ফাইলগুলো ডোমেইন সংযুক্ত একটি লাইভ সার্ভারে রাখতে হয়। যার ফলে ওয়েবসাইটটি পৃথিবীব্যাপী সবাই দেখতে এবং ব্যবহার করতে পারে যেমনঃ- আপনি এখন kamalmostakin.com ওয়েবসাইটের মাধমে আমার এই লেখাটি পড়ছেন।

ওয়েব ডিজাইন ওয়েব ডেভেলপার

সহজভাবে বোঝানোর জন্য আপনি এখন ফেসবুক ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করছেন তাই এটা দিয়েই উদাহরণ দেই। আপনি স্ক্রিণের দিকে তাকান। কি দেখতে পাচ্ছেন? সবার উপরে বাম কর্ণারে ফেসবুকের লোগো, পাশে একটি সার্চবার এরপরে কিছু আইকন, বাম সাইডবারে কিছু লিস্ট আইটেম ডান পাশে কন্টেন্ট এবং আরো বিভিন্ন কন্টেন্ট/এলিমেন্ট বিভিন্ন ভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে। লোগো, ছবি, লেখা, ভিডিও এবং অডিও এগুলা সাজানো গুছানোই হচ্ছে ওয়েব ডিজাইন। একেকটা ওয়েবসাইটে দেখবেন একেক ভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে। এর কারণ হলো যে ওয়েবসাইট যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছে সেটা সেভাবেই প্রদর্শিত হয়। ওয়েবসাইট ডিজাইনের কাজ জিনি করেন তিনিই হলে ওয়েব ডিজাইনার।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ওয়েব ডেভেলপার

একটি ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট করার মাধ্যমে সেই ওয়েবসাইটের প্রাণ সঞ্চার করা হয়। একজন ওয়েব ডিজাইনার যে ডিজাইন তৈরি করেন তার প্রতিটা উপকরণকে ফাংশনাল এবং ডাইনামিক করার জন্য পরিচালিত কর্মকান্ডই হচ্ছে Web Development। ওয়েবসাইট সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- স্টাটিক ওয়েবসাইট এবং ডায়নামিক ওয়েবসাইট।
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটঃ স্টাটিক ওয়েবসাইট হল সেই ধরণের ওয়েবসাইট যে ওয়েবসাইটের কোনো এডমিন প্যানেল থাকে না। কোডিং ফাইল এডিট করা ছাড়া যেই ওয়েবসাইটের কোন পোস্ট, পেজ তৈরি করা যায় না এবং কোন ধরণের পরিবর্তন করা যায় না।

ওয়েবসাইটের ধরণ ওয়েব ডেভেলপার

  • স্টাটিক ওয়েবসাইট
  • ডাইনামিক ওয়েবসাইট

স্টাটিক ওয়েবসাইটঃ যে ওয়েবসাইট ডাইনামিক করা হয় নাই, শুধুমাত্র html, css দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে এই ধরণের ওয়েবসাইটই হলো স্টাটিক ওয়েবসাইট। স্টাটিক ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট পরিবর্তন করতে হলে সরাসরি কোর ফাইলে ঢুকে কোডিং এর মাধ্যমে পরিবর্তন করা যাবে। যারা কোডিং পারে না তারা এধরণের ওয়েবসাইট মেইন করতে পারবে না।

ডায়নামিক ওয়েবসাইটঃ ডায়নামিক ওয়েবসাইটের একটি কন্ট্রোল প্যানেল থাকে। ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওয়েবসাইটকে ডায়নামিক করা হয়। কোডিং ফাইল এডিট করা ছাড়া এমনকি কোডিং না জানলেও এধরণের ওয়েবসাইট এডিট এবং কন্ট্রোল করা যায়। উদাহরণ হিসেবে এই পোস্টটির কথাই ধরুন, এই পোস্টটি আমি ফেসবুকের ওয়েবসাইটে লিখতে এবং পাবলিশ করতে কোন ধরণের কোডিং করতে হয় নাই। কোডিং অটোমেটিক জেনারেট হয়ে গেছে ( মাউসের রাইট ক্লিক করে Inspect এর উপরে ক্লিক করলে অথবা কিবোর্ড থেকে ctrl+shift+I চাপলেই এই পেইজের কোডগুলো দেখতে পাবেন। )। সহজে ব্যাবহার এবং পরিচালনা করার জন্য ওয়েবসাইটকে ডায়নামিক করা হয়। যেমন যেখানে স্টাটিক ওয়েবসাইটের একটি নতুন পোস্ট তৈরি করার জন্য HTML ফাইলে ঢুকে তারপর পোস্ট লিখতে হয় সেখানে ডায়নামিক ওয়েবসাইটে কন্ট্রোল প্যানেল থেকে New post ক্লিক করলেই পোস্ট লেখার জন্য এডিটর পেজ চলে আসে। পোস্ট লেখা শেষে Publish বাটনে ক্লিক করলেই পোস্টট পাব্লিশ হয়ে যায়। ডায়নামিক ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ড্রাগ এন্ড ড্রপএবল পেজ বিল্ডার থাকে যার মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিউ লুকিং ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। আর এজন্যও কোডিং ফাইলে হাত দেয়া বা এডিড করা লাগে না।

ওয়েব ডেভেলপার এর ধরণ

  • ফ্রন্টএন্ড ওয়েব ডেভেলপার
  • ব্যাকএন্ড ওয়েব ডেভেলপার
  • ফুলস্ট্যাক ওয়েব ডেভেলপার

ফ্রন্টএন্ড ওয়েব ডেভেলপারঃ এ ধরনের ডেভেলপাররা শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইটের বাহিরের অংশকে ডিজাইন করে থাকে। কোন ক্লায়েন্ট যখন একজন ফ্রন্ট ইন্ড ডেভেলপারকে নির্দিষ্ট ডিজাইনের কোন ওয়েবসাইট তৈরি করে দিতে বলেন, তখন এ ধরনের ডেভেলপাররা তাদের ক্লায়েন্টের কাছ থেকে ওয়েবাসইটকের ডিজাইন জেনে নিয়ে শুধুমাত্র HTML ও CSS এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট ডিজাইন করে দেয়। এ ধরনের ডেভেলপাররা ওয়েবসাটকে ফ্যাংশনাল করে দেয় না।

ব্যাকেন্ড ডেভেলপারঃ একজন ফ্রন্টএন্ড ডেভেলপারের ডেভেলপ করা স্টাটিক ওয়েবসাইটে প্রাণসঞ্চার করার কাজটি যিনি করেন তিনিই হলে ব্যাকেন্ড ডেভেলপার। ফ্রন্টএন্ড ডেভেলপারের কাজের উপরে ব্যাসেস করে ব্যাকএন্ড ডেভেলপার ওয়েবসাইটকে ডেভেলপ করে থাকেন। এজন্য ফ্রন্টএন্ড ডেভেলপারেকে ব্যাকএন্ড সম্পর্কে ধারণা না রাখলেও চলে কিন্ত ব্যাকএন্ড ডেভেলপারকে ফেন্টএন্ড সম্পর্কে ধারণা রাখতে হয়। নরমালি একজন ব্যাক ইন্ড ডেলেভপার ফ্রন্ট ইন্ড ডেভেলপারের নিকট থেকে একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইনের কোডগুলো নিয়ে সেটির একটি এ্যাডমিন প্যানেল তৈরি করেন। এ্যাডমিন প্যানেল তৈরি করার পর সেই ওয়েবসাইটের ডিজাইন পরিবর্তন করার জন্য বা নতুন পোস্ট লেখার জন্য কোডিং করতে হয় না। অর্থাৎ একজন ব্যাক ইন্ড ডেভেলপার একটি ওয়েবসাইটকে স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটে রূপান্তর করে দেয়। ব্যাক ইন্ড ডেভেলপমেন্টের কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই HTML, CSS, Javascript and Jquary, PHP, Python, Bootstrap সহ আরো বিভিন্ন ধরনের কোডিং ভালো পরিমানে জ্ঞান থাকতে হয়। সবগুলো বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকলে ব্যাক ইন্ড ডেলেভপমেন্টের কাজ ঙ্করা সম্ভব না।

ফুলস্টাক ওয়েব ডেভেলপারঃ যিনি ফ্রন্টএন্ড এবং ব্যাকএন্ড দুই ধরণের ডেভেলপমেন্টএর কাজ জানেন তিনিই হলেন ফুলস্টাক ওয়েব ডেভেলপার।

ওয়েব ডেভেলপার হতে হলে যা যা থাকতে হবে এবং শিখতে হবে

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখা দীর্ঘ সময় এবং অধ্যাবসায়ের ব্যাপার। সময় নিয়ে প্রাক্টিস করার মাধ্যমে আপনিও হতে পারেন ওয়েব ডেভেলপার। HTML, CSS সহ আরো কতগুলো প্রগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর ব্যবহার আপনাকে জানতে হবে। নিচে আমি সবগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি।

  1.  কম্পিউটারঃ- মোটামুটি ভালো মানের একটি কম্পিউটার। ইন্টারনেট কানেকশন।
  2.  সফটওয়্যার এবং টুলসঃ নোটপ্যাড++, ড্রিম ওয়েভার অথবা এ জাতীয় যেকোন একটি টেক্সট এডিটর সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা নিতে হবে। কারণ ওয়েবসাইটের ফাইলগুলো এই টেক্সট এডিটর এর মাধ্যমেই লেখা এবং পরবর্তিতে এডিট করা হয়। ফটোশপ সম্পর্কে মোটামুটি আইডিয়া থাকতে হবে।
  3.  ইচ্ছাশক্তিঃ- প্রচুর পরিমানে ইচ্ছাশক্তি এবং ধৈর্য্য থাকা লাগবে।
  4.  কাজের পরিবেশঃ- আপনার কাজ করার জন্য একটি নিরিবিলি পরিবেশ প্রয়োজন। কারণ আপনাকে অনেক সুক্ষ এবং জটিল বিষয় খুব ঠান্ডা মাথায় শিখতে হবে।
  5. সময়ঃ- পর্যাপ্ত সময় আপনার হাতে থাকতে হবে। কাজ করতে বসলেন বউ এসে বাজারের ব্যাগ হাতে ধরিয়ে দিল অথবা ঘুরতে নিয়ে যেতে বললো অথবা আপনি খুব অর্থনৈতিক অভাব অটনের মধ্যে আছেন অল্পকদিন শিখে ইনকামের ধান্দা করছেন। হবে না ভাই। দৈনিক ৮/১০ ঘন্টা সময় নিয়ে মিনিমাম ২/৩ বছর মাগনা কামলা খাটার মানসিকতা থাকতে হবে।
  6. ভাষাগত দক্ষতাঃ- ইংরেজি মোটামুটি ভালো জানা লাগবে।

উপরোক্ত বিষয়গুলো যদি আপনার ফুলফিল হয় তাহলে আপনি ওয়েব ডেভেলপার হবার জার্নি শুরু করতে পারেন। শেখা শুরুর আগে আপনি ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট নিয়ে গোগল এবং ইউটিউবে ১০/১৫ দিন ঘাটাঘাটি করুন। আর্টিকেল পড়ুন, ভিডিও দেখুন। উদ্দেশ্যহীনভাবে যা সামনে পান তাই পড়ুন এবং দেখতে থাকুন। এতে করে আপনার নিজের একটা ধারণা তৈরি হবে এবং নিজেকে যাচাই করার একটা সুযোগ তৈরি হবে। যেহুতু আপনি কোডিংএর মত একটা কাটখোট্টা জিনিশ শিখতে যাচ্ছেন সেহুতু কোডিং প্রতি যদি ভালোলাগা এবং আগ্রহ তৈরি হয় তবেই আপনি শেখা শুরু করেন।

যদি নিজের সাথে বোঝাপড়া করে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেন যে ওয়েব ডেভেলপার হবেন তাহলে আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনি নিচের বিষয়গুলো সিরিয়াল বাই সিরিয়াল শেখা শুরু করে দিন।

  1. এইচটিএমএল (HTML)- এইচটিএমএল(hypertext markup language ) হচ্ছে এক ধরনের মার্কআপ ল্যাংগুয়েজ। এইচটিএমএল দ্বারা একটি ওয়েবসাইটের বিভিন্ন অংশকে মার্ক করা হয়। একটি ওয়েবসাইটের হেডার কোথায় হবে, ফুটার কোথায় হবে, সাইডবার কোথায় থাকবে ইত্যাদি ইত্যাদি অংশগুলোকে এইচটিএমএল দ্বারা নির্ধারণ করা হয়। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য HTML শিখতেই হবে এর বিকল্প নাই। HTML শেখার জন্য এখানে ক্লিক করে শেখা শুরু করে দিতে পারেন।
  2. সিএসএস (CSS)- ওয়েবসাইটের মেকাপ করা হয় সিএসএস (cascading style sheets) দিয়ে। HTML মার্কাপ করা ওয়েবসাইট মুলত একটা কংকাল। এই কংকালকে CSS মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন করা হয়। আপনার ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি অংশের মাপ কতটুকো হবে, প্রত্যেকটি অংশে কালার কি রকম হবে, ছবি কত সাইজের হবে, ফন্ট সাইজ কত হবে বা কোন ফন্ট হবে ইত্যাদি সহ যাবতীয় ডিজাইনের কাজ করার জন্য সিএসএস শিখতে হবে। CSS শেখার জন্য এখানে ক্লিক করে শেখা শুরু করে দিতে পারেন।
  3.  Responsive Design – এটি সিএসএস এর একটি অংশ। একটি ওয়েবসাইট বিভিন্ন ধরণের ডিভাইস থেকে ভিজিট করা হয়ে থাকে। তাই বিভিন্ন ধরণের ডিভাইসে যাতে ওয়েবসাইটটি ঠিকঠাক ভাবে দেখায় এমন ভাবে ডিজাইন করাই হচ্ছে রেসপন্সিভ ডিজাইন। ওয়েবসাইট যদি শুধুমাত্র কম্পিউটারের জন্য ডিজাইন করা হয় তাহলে সেই ওয়েবসাইট মোবাইল দিয়ে ভিজিট করা হলে কন্টেন্ট ঠিক্টহাক মত শো করবে না। Responsive Design করার জন্য CSS এর ব্যবহার ভালোভাবে শিখতে হবে।
  4. Javascript & jQuery – Javascript & jQuery দিয়ে একটি ওয়েবসাইটের ইনটর একটিভ করা হয়। উদাহরণ হিসেবে ধরুন- ফেসবুকে কেউ যখন আপনার পোস্টে কোন লাইক বা কমেন্ট করে, তখন আপনার কাছে একটি নটিফিকেশন আসে। এই কাজকে ইনটর একটিভিটি বলা হয়। এ ধরনের কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই Javascript & jQuery শিখতে হবে। তাছাড়া আপনার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের স্লাইড শো, ইমেইল ফরম, ইমেল সাবস্ক্রিবশন ফরম ও লগইন ফরম তৈরি করে সেটাকে ফ্যাংশনাল করার জন্য Javascript & jQuery লাগবে। Javascript & jQuery শেখার জন্য এখানে ক্লিক করে শেখা শুরু করে দিতে পারেন।
  5.  Bootstrap – Bootstrap হচ্ছে অনেক জনিপ্রয় একটি ফন্ট ইন ফ্রেমওয়ার্ক। এটির সাহায্যে একটি ওয়েবসাইটকে খুব অল্প সময়ে খুব চমৎকার ডিজাইন করে ফালা যায়। CSS দিয়ে যে কাজ করতে আপনার ১ঘন্টা লাগবে Bootsrap দিয়ে সেই কাজ ১০ মিনিটে করতে পারবেন। অধিকাংশ ক্লায়েন্টরা তাদের ওয়েবসাইট ডিজাইন করার জন্য Bootstrap এর ডিমান্ড করে থাকে। এইচটিএমএল, সিএসএস ও Javascript & jQuery শিখে থাকলে Bootstrap শিখাটা আপনার জন্য পান্তাভাত।
  6.  পিএচপি (PHP) একটি ওয়েবসাইটকে ডায়নামিক বা ফ্যাংশনাল করার জন্য পিএইচপি ব্যবহার করা হয়। অবশ্য এ জাতীয় আরো অনেক ল্যাঙ্গুয়েজ আছে যার মাধ্যমে আপনি ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট করতে পারবেন। তবে আপনি প্রথমে PHP শিখুন। ডায়নামিক ওয়েবসাইট নিয়ে আমি উপরের আলোচনা করেছি। মূলত একটি ওয়েবসাইটের এ্যাডমিন প্যানেল তৈরি করার জন্য পিএইচপি ব্যবহার করা হয়। সাধারণত যে ওয়েবসাইট বেশি ডায়নামিক বা ফ্যাংশানাল করা থাকে, সে ওয়েবসাইট বা থীমের ডিমান্ড বেশি হয়।
  7.  CMS (Content Management)- এর পর আপনি একটি CMS এর ব্যবহার শিখুন। আমি সাজেস্ট করবো ওয়ার্ডপ্রেস শিখুন। (WordPress) ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় CMS (Content Management) সফটওয়্যার। বিশ্বের অনেক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এ জন্য আপনি অবশ্যই ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিবেন। অন্যান্য বিষয়গুলো শিখতে পারলে ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে আপনার বেশি সময় লাগবে না।
  8.  গিট (Git) Git হচ্ছে একটি সফটওয়্যার ভার্সন কন্ট্রল সিস্টেম। যেকোন ওয়েবসাইট বা সফটওয়্যার আরো অধিক জনপ্রিয় বা স্মুথ রাখার জন্য প্রতিনিয়ত আপডেট রাখতে হয়। আপনার ওয়েবসাইটের ভার্সন আপডেট বা নিয়ন্ত্রন করার জন্য গিট শিখতে হবে। আপনার তৈরি কোন ওয়েবসাইট বিক্রি করলে সেটি আপনার ক্লায়েন্টদেরকে গিট এর মাধ্যমে আপডেট দিতে পারবেন। কারণ আপডেট ছাড়া কোন সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইটের উপর মানুষের আস্তা থাকে না। কাজেই ওয়েবসাইট সবমসয় আপডেট রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই গিট শিখে নিতে হবে।
  9.  UI অথবা UX – একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইন করাই হচ্ছে UI এর কাজ। আপনি একজন ভালোমানের ওয়েব ডিজাইনার হতে চাইলে, আপনার অবশ্যই UI জানতে হবে। UI সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকলে আপনি নিজে নিজে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ডিজাইন তৈরি করে ক্রিয়েটিভিটি দেখাতে পারবেন। আপনি একজন ফুলস্ট্যাক ওয়েব ডেভেলপার হতে চাইলে আপনার UI সম্পর্কে ধারনা থাকা প্রয়োজন।
  10.  ফটোশপ (Photoshop)- ফটোসপ সম্পর্কে আগেই বলা হয়েছে। ফটোশপে খুব বেশি অভিজ্ঞ না হলে আপনাকে শেখা লাগবে। কারণ ওয়েবসাইট ডিজাইন করার জন্য মাঝে মধ্যে ওয়েবসাইটের লোগো ডিজাইন, লোগো, ইমেজ সাইজ, রিজাইজ এরকম আরো টুকটাক কাজের দরকার পড়ে। এ ক্ষেত্রে ফটোশপ জানা না থাকলে আপনি একজন অভীজ্ঞ ওয়েব ডেভেলপার হতে পারবেন না। তাছাড়া সাধারণত ক্লায়েন্টরা ফটোশপে তাদের ওয়েবসাইটের ডিজাইন করে একজন ওয়েব ডেভেলপারের কাছে নিয়ে আসে। এ ক্ষেত্রে ফটোশপ থেকে ওয়েবসাইটের এলিমেন্ট আলাদা করার জন্য অবশ্যই ফটোশপ সম্পর্কে জানা থাকতে হবে।
  11.  এসইও (SEO)- SEO করা SEO এক্সপার্টের কাজ হলেও একজন ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের বেসিক বিষয়ে ধারনা থাকতেই হয়। কারণ ওয়েবসাইটের অনেক ট্যাগ রয়েছে যেগুলোর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের উপযোগি করে তৈরি করতে হয়। বিশেষকরে ওয়েবসাইটের কোথায় H1, H2, H3 ট্যাগ থাকবে এবং কোন কোন HTML অংশে সঠিক স্কীমা ব্যবহার করতে হবে, সেটি জানা না থাকলে ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ হবে না। আর ওয়েবসাইট অপটিমাইজ করা না থাকলে ওয়েসবাইট তৈরি করে আপনার ক্লায়েন্টরা লাভবান হতে পারবে না।

উপরোক্ত বিষয়গুলো কোথা থেকে শিখবেনঃ

আপনার শিখার আগ্রহ থাকলে প্রথমত অনলাইনে গোগল ইউটিউব হতে শিখতে পারেন। বিভিন্ন লেখকের বই পড়তে পারেন। কোন কোচিং সেন্টার থেকে শিখতে পারেন।
তবে আমি বলবো আপনি শুরুতেই কোথাও ভর্তি হয়ে টাকা খরচ না করে অনলাইনে ফ্রি রিসোর্সগুলো থেকে চেষ্টা করুন। আমি এখানে কিছু ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছি। আপনি এখান থেকে অনেক উপকৃত হবেন।

এইসব ফ্রি রিসোর্স থেকে কিছুদিন শেখার পরে ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেন। প্রিমিয়াম কোর্স কিনে নিজে নিজে বাসায় বসে শিখতে পারেন। তাহলে আপনার শেখাটা আরো দ্রুত হবে।

সবগুলো কাজ শিখে যাবার পরে আপনি একজন ওয়েব ডেভেলপার হয়ে যাবেন। তখন একটু চেষ্টা করলেই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ফিল্ডে ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবেন। অফলাইন, অনলাইনে বিভিন্ন প্লাটফর্ম হতে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন। কি ভাবছেন গুল মারছি, তাই আপনি হয়ত বিষয়টি হালকাভাবে নিচ্ছেন। না ভাই এটা ১০০% সত্য আপনি একজন ভালোমানের ওয়েব ডেভেলপার হলে আপনাকে কোন চাকরি খুঁজতে হবে না। তখন বিভিন্ন আইটি কোম্পানি আপনাকে চাকরির জন্য অফার করবে। কারণ ওয়েব ডেভেলপমেন্টের অনলাইনে ও অফলাইনে প্রচুর পরিমানে ডিমান্ড রয়েছে।

নিচের কয়েকটি উপায়ে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারেন।

১। কোম্পনিতে ওয়েব ডেভেলপার হয়ে আপনি একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার হলে বিভিন্ন আইটি কোম্পানিতে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে চাকরিতে যোগ দিতে পারেন। একজন ওয়েব ডেভেলপার বিভিন্ন আইটি কোম্পানিতে মাসে ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা বেতনের চাকরি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনাকে চাকরির জন্য কারো দরজায় দরজায় যেতে হবে না। আপনি কাজ জানলে আপনার কাজ বিভিন্ন চাকরির অফার নিয়ে আসবে।
২। ফ্রিল্যান্সিং করে– বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে সার্ভিস সেল করার মাধ্যমে আপনি প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন। দক্ষ ডেভেলপারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে এসব মার্কেটপ্লেসে।
৩। নিজের ডিজাইন বিক্রি করে—নিজের ডেভেলপ করার ওয়েবসাইট, থিম, প্লাগিন বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস আছে। আপনার নিজের ওয়েবসাইট থেকে এগুলো বিক্রি করার মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন। আপনি জনপ্রিয় একটা থিম বা প্লাগিন একবার ডেভেলপ করেই সারাজীবন ইনকাম করতে পারেন। থিম বেচাকেনার ওয়েবসাইট থিমফরেস্ট গেলেই এরকম উদাহরণ ভুরিভুরি পাবেন।

আরো বাড়তি কিছু ইনফরমেশন পেতে এই ব্লগটি পড়তে পারেন

আমি আশা করছি আপনার মনের ভেতরে ঘুরপাক খাওয়া প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনি পেয়েছেন। এরপরো কোনো কিছু জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন। ভাল লাগলে ব্লগটি শেয়ার করবেন।

আজ এই পর্যন্তই ভালো থাকবেন সবাই।

Leave a Reply