ফ্রিল্যান্সিং কী?
ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে যা যা লাগবে
- একটি কম্পিউটার
- ইন্টারনেট কানেকশন
- এক বা একাধিক কাজের উপর দক্ষতা
- কমিউনিকেশন দক্ষতা
- পার্সোনাল ব্রান্ডিং তৈরি করে কাজে নেমে পড়া
উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আমরা একটু বিস্তারিত আলোচনা করি।
১। একটি কম্পিউটারঃ আপনি যেহুতু কম্পিউটারের মাধ্যমে কাজ করবেন সেহুতু একটি কম্পিউটার আপনার থাকা লাগবেই। কাজ শেখার শুরুতেই আপনি কি ধরণের কাজ করবেন তার উপর ভিত্তি করে একটি কম্পিউটার কিনে নিন। যদি গ্রাফিক্স অথবা ভিডিও এডিটিং এর কাজ করেন তাহলে একটু ভালো কনফিগারের কম্পিউটার লাগবে। যদি ওয়েব ডিজাইনের কাজ করেন তাহলে এরচে একটু কম কনফিগারের কম্পিউটার লাগবে। এখন প্রশ্ন করতে পারেন, ল্যাপটপ কিনবো নাকি ডেস্কটপ? আপনার ইচ্ছা অনুযায়ি যেকোন একটা নিতে পারেন। কিন্তু আমার সাজেশন হল আপনি যদি প্রফেশনালি কাজ করতে চান তাহলে একটি ডেস্কটপই নিয়ে নেন।
২। ইন্টারনেট কানেকশনঃ কম্পিউটারের সাথে আপনাকে একটি দ্রুত গতির ইন্টারনেট কানেকশন নিতে হবে। কারণ হল, শেখার সময় অনেক রিসোর্স আপনাকে ইন্টারনেট থেকে খুঁজে নিতে হবে, কাজ শেখার পরে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দুরবর্তী কোন ব্যক্তির সাথে কমিউনিকেশন করেই কাজ করতে হবে। আপনার ইন্টারনেট কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে দুনিয়া আপনার হাতের মুঠোয় থাকবে।
৩। এক বা একাধিক কাজের উপর দক্ষতাঃ আপনি হাজার চেষ্টা করলেও ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপনি একটি কাজের উপরে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করছেন। ভালো কিছু পেতে হলে এবং স্মার্ট একটি ক্যারিয়ার গঠন করতে হলে আপনাকে এক বা একাধিক কাজের উপরে এক্সপার্ট হতে হবে। কারণ হলো ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো করবেন ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে। বিশ্বের বাঘা বাঘা ফ্রিল্যান্সাররা এসব মার্কেটপ্লেসে দোকান খুলে বসে আছে। তাদের সাথে টক্কর দেওয়ার মত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তবে ভয়ের কিছু নাই বাংলাদেশের অনেক মানুষই এপেশায় সফলতার সাথে কাজ করছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মানুষ যুক্ত হচ্ছে এ পেশায়। ইচ্ছে করলে আপনি একটি কাজে ভালো পরিমানে দক্ষতা অর্জন করে ক্যারিয়ার গঠন করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে কি কি কাজ পাওয়া যায় এবং আপনি কোনটা শিখবেন
কীভাবে শিখবেন
ধরেন, আপনি ওয়েব ডিজাইন শিখার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। ওকে কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু এখন আপনি আপনি কীভাবে আগাবেন বুঝতে পারছে না। আচ্ছ সমস্যা নাই আমি আপনাকে বলে দিচ্ছি। আপনি গুগলে এবং ইউটিউবে “ওয়েব ডিজাইন কি?”, “ওয়েব ডিজাইন কাকে বলে”, “ওয়েব ডিজাইন কীভাবে শিখবো?” এইভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আপনার মনে ওয়েব ডিজাইনে যা জানতে চান এবং যত ধরণের প্রশ্ন আসে সব লিখে সার্চ করুন এবং সামনে যা পান তাই পড়ুন এবং শুনুন। ১ মাসের মত প্রতিদিন অবসর সময়ে এই কাজগুলো করুন।
একমাস পরে দেখবেন উক্ত বিষয়ে আপনার ভেতরে খুব ভাল একটা ধারণ তৈরি হয়েছে। এবারে গোগল এবং ইউটিউব থেকে একটু একট করে শেখা শুরু করে দিন। ১/২ মাস শিখুন। এরপর নিজে নিজে উপলবদ্ধি করার চেষ্টা করুন যে আপনি আসলে যা শিখছে তা আপনার ভাল লাগে কি, না? যদি ভালো লাগে তাহলে শেখা অব্যাহত রাখুন। আর যদি ভাল না লাগে, বোরিং লাগে। যদি এমন মনে হয় ৬ মাস কোন রকমে মাটি কামড়ে শিখে দেন এটা দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে ডলার কামাবো। এরকম ইচ্ছা থাকলে হবে না ভাই। আপনি এখনই অফ যান। আপনার টাইম হুদাই পাস হবে।
ফ্রিল্যান্সিংএ হাই ডিমান্ডেবল জনপ্রিয় কয়েকটি কাজ হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং ইতাদি এর যেকোন একটা কাজ শিখে আপনি বেশ ভাল পরিমানে আয় করতে পারবেন। কিন্তু এর জন্য আপনাকে অনেক সময় নিয়ে প্রাক্টিস করে করে ব্যাপার আয়ত্ব করতে হবে। ৬ মাস ১ বছরে আপনি হয়তো কিছুই করতে পারবেন না। শুরুর দিকে কোন আউটপুট আপনি পাবে না। কমপক্ষে ২/৩ বছর মাগনা কামলা খাটতে হবে।
ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার স্টেপ স্টেপ গাইডলাইন পাওয়ার জন্য এই ব্লগটি পড়ুন।
৬ মাস আপনি ইউটিউব গোগল থেকে ব্যসিক বিষয়গুলো শিখবেন। এরপর এডভান্স কাজগুলো আপনি চাইলে গোগল, ইউটিউব থেকেও শিখতে পারেন। ইন্টারনেটে সব কিছুই আছে আপনাকে জাস্ট খুঁজে নেওয়া জানতে হবে। আর যদি কোন টিউটরের সাহায্য নিতে চান সেটাও ভালো সিদ্ধান্ত হবে। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে একটু সতর্ক হতে হবে। কারণ হলো আপনি কোন ভুয়া কোচিং সেন্টার এবং টিউটরের কাছে ভর্তি হলে টাকা এবং সময় দুটোই জলে যাবে। পরে আপনি পুরো সিস্টেম ব্যবস্থাকেই দোষারোপ করবেন। কারণ হলো এইলাইনে ছ্যচ্ছর বাটপারে ভরা। এমনও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা অনলাইন থেকে সারাজীবনে একটি টাকা ইনকাম করতে পারে নাই। তারাও অনলাইন থেকে ৩ মাসের কোর্স করিয়ে ফ্রল্যান্সার বানায়। এদের থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবেন।
কাজ শেখা শেষ এখন কিভাবে কোথায় কাজ করবেন
৩। freelancer: এখানে আপনি প্রায় সব ধরণের কাজের জন্য ক্লায়েন্ট পেয়ে যাবেন। ১৩৫০ আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে লোকেরা এখানে কাজ করছেন। আপনি চাইলে খুবে সহজে এখানে একাউন্ট খুলতে পারবেন। এবং কাজের জন্য এপ্লাই করার মাধ্যমে কাজ পেতে পারেন।
কিন্তু প্রপার স্কীল অর্জন করা বাড়ির ঘাটার কথা না। এর জন্য অনেক সময় নিয়ে সাধনা চালিয়ে যেতে হবে। হুজুগে বাঙালি হয়ে এ লাইনে আসলে নিশ্চিত ধরা খাবেন এর মধ্যে কোন ভুল নাই। কাজে যা করবেন চিন্তা ভাবনা করে চোখ কান খোলা রেখে তার পর করবেন। কারো প্রচোরণায় পড়ে হুট করে পানিতে নেমে পড়া বোকামি ছাড়া আর কিছু না।
ভালো ভাবে কাজ না শিখে কখনই মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খুলবেন না। এতে করে কাজতো পাবেন না। বরং হাসির পাত্র হবেন।